Home STORY অনুভূতি (পর্ব _৩)
Home STORY অনুভূতি (পর্ব _৩)

অনুভূতি (পর্ব _৩)

 



#পর্ব-০৩


বাইরে বাইক নিয়ে অপেক্ষা করছে সাদিফ।কানে ফোন নিয়ে কার সাথে যেন কথা 


বলছে।পরণে ব্লু জিনস আর ব্ল্যাক শার্ট।চোখে কালো সানগ্লাস।হাত দিয়ে বারবার 


সামনের চুলগুলো পিছনে ঠেলে দিচ্ছে।


মিহুকে বের হতে দেখে চোখের ইশারায় বসতে বলে।


মিহু মাথা নাড়িয়ে বাইকে উঠে বসে।মনে মনে বারবার দোয়া করছে তার ক্রাশ অর্থ্যাৎ 


অনিক যেন আজকে না থাকে যাওয়ার পথে।কোনোভাবেই যেন না থাকে!!থাকলে যে 


তাকে কি একটা পরিস্থিতিতে পরতে হবে তার জানা নেই।দুই দিক দিয়েই ফেঁসে যাবে সে।


বড় রাস্তার মোড়ে যেয়ে বাইক থামায় সাদিফ।মাথাটা হাল্কা ঘুড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,


-ওই না?


সাদিফের ডাকে হুঁশ ফেরে মিহুর।অন্যমনস্ক হয়ে অতিরিক্ত চিনতায় ডুবে ছিলো সে।মাথা তুলে দেখে অনিক দাড়িয়ে আছে রাস্তার ওপাশে।সাদিফ কেমনে চিনলো বুঝে উঠে না সে।


-হ্যাঁ,তুমি কেমনে চিনলে?


-অভি বললো কালকে।আর আমি চিনিতো ওকে।বলতে বলতেই বাইক থেকে নেমে দাড়ায় সাদিফ।

হাত ধরে বোনকে নামিয়ে দেয়।হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে মুখের ঘাম মুছে মিহু।কোনোভাবে আজকে সামাল দিতে পারলেই হয়।আর কোনোদিনও অনিকের দিকে ফিরেও তাকাবে না সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে সে।


গুটিগুটি পায়ে ভাইয়ের পিছে দাঁড়ায় মিহু।সাদিফ শান্ত গলায় বলে,


-অনিক তুমি ওকে ডিসটার্ব করো?এই বয়সেই এসব শিখছো?তোমার বয়স পার করে এসেছি আমি।এই বয়সে ধমকে কাজ হয়না।হিতে বিপরীত হয়।তাই আমি ভালো করেই বলছি তোমাকে এসব ছাড়ো।আমি যেন আর কখনো না শুনি তুমি এসব করছো।গট ইট্?


মিহু অনিকের রিয়েকশন দেখার জন্য অপেক্ষা করেছিলো।তবে সে যা ভেবেছিলো তেমন কিছুই হলোনা।

বরং হলো তার উল্টো।অনিক মাথা নিচু করে বললো,


-সরি ভাইয়া আর কখনো হবেনা।


মিহু হতবাক,চমকিত।হলোটা কি?ভ্রু কুচকে নিজেকে চিমটি কাটলো সে।নাহ্,ব্যাথা তো পাচ্ছে।তারমানে সত্যি!!

অনিকের দিকে তাকায় সে।অনিক স্বাভাবিকভাবে দাড়িয়ে আছে।তাকে দেখে মনে হচ্ছে যা হচ্ছে তাই যেন হবার ছিলো।

__________

মিহু চলে যেতেই একটা বাইক এসে থামে সেখানে।

হেলমেট খুলে চুলগুলোতে হাত চালাতে চালাতে অভি বলে,


-গুড জব,অনিক।যেমনটা বলেছিলাম ঠি ক তেমনটাই করেছো।


-জি ভাইয়া।আপনি বলেছেন আমি না করবো নাকি?বলেই হাসলো অনিক।


-অভি হেলমেটটা পরতে পরতে বললো,হুম গুড।কোন সমস্যা হলে আমাকে বলবা।আজকে আসি।আল্লাহ হাফেজ।


-আল্লাহ হাফেজ ভাইয়া।


বাইক স্টার্ট দিলো অভি।মুখে তার দুষ্টু হাসি।মিহুর চিন্তিত চেহারাটা দেখে যে তার কি পরিমাণ হাসি পাচ্ছিল।

অনিককে সে আগেই বলে রেখেছিল যেন সাদিফ আসলে সে দোষটা নিজের বলেই স্সিকার করে।

মিহুকে অপমান করার কোনো ইচ্ছা ছিলোনা তার।সে শুধু এটাই বোঝাতে চেয়েছিলো যে মিথ্যা বললে কতটা ঝামেলায় পরতে হয়।আর মিহুর চেহারা দেখে সে এতটুকু আশ্বস্ত হয়েছে মিহু অন্তত মিথ্যা বলবে না আর কখনো।

__________

কলেজের সামনে বাইক থামায় সাদিফ।হাত বাড়িয়ে মিহুকে বলে,


-সাবধানে নাম।পরিস না।

বাইক থেকে নামতে নিলে সবসময়ই হোঁচট খায় মিহু।দু তিনবার পরে ব্যাথাও পেয়েছে সে।এজন্যই সাদিফের এক্সট্রা সতর্কতা।

মিহু নামতেই পাশে এসে দাড়ায় ইপসা।মিহুর একমাত্র বান্ধবী সে।মিহুর হাত টেনে ধরে সে।


-এত দেরি হলে কেন তোর?জানিসনা আজকে ইমপোর্টেনট ক্লাস আছে।আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল সে তবে সাদিফকে দেখে থেমে যায়।সাদিফ তখন হাতের ঘড়ি ঠি ক করতে ব্যস্ত।একনজর ইপসাকে দেখে সে।তারপর মিহুর দিকে তাকিয়ে বলে,


-একা আসতে পারবিনা?নাকি আমি নিতে আসবো?


-না না।আমি একাই পারবো।


"আচ্ছা"বলে দ্রুত বাইক ছুটিয়ে চলে যায় সে।

মিহু দীর্ঘ:শ্বাস ফেলে।আজকের ঘটনায় সে খুবই দিধা গ্রস্থ।এখনো তার মাথায় কিছুই ঢুকছেনা।

ইপসা বাহু ঝাঁকিয়ে বলে,


-এই কি হলো তোর?চল।


-হুম যাচ্ছি।চল।


ক্লাস রুমে বসে আছে তারা।এখন ব্রেক টাইম।ইপসা গালে হাত রেখে মনোযোগী হয়ে মিহুর কথা শুনছে।

মিহু একহাত দিয়ে তুড়ি বাজিয়ে বললো,


-তুই কি আদো আমার সব কথা বুঝতে পারছিস ইপসা?এমন ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছিস কেনো?


-পারছি রে দোস্ত পারছি।শুধু সব না একটু বেশিই বুঝতে পারছি আমি....


......

Comments

You May Also Like