Home STORY অনুভূতি (পর্ব _২)
Home STORY অনুভূতি (পর্ব _২)

অনুভূতি (পর্ব _২)


 


#পর্বঃ-০২


নিজের ঘরে যেয়ে দরজা আটকে দেয় মিহু।বিছানায় ব্যাগটা রেখে জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে।

ফ্রেশ হয়ে বের হতেই রান্নাঘর থেকে মায়ের ডাক শুনে রুমের বাহিরে পা বাড়ায় সে।

ভাইয়ের রুম কাটিয়ে যাওয়ার সময় হাসাহাসির শব্দ শুনে মনে মনে সস্তি পায় সে।অভি কিছু বলেনি এই ভেবেই চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে।

রান্না ঘরে ঢুকতেই দেখে মা বিরিয়ানি রান্না করছে।ভ্রু কুচকে ফেলে মিহু।সন্ধিহান কন্ঠে বলে,


-এসব রান্না করছো কেনো?কেউ আসবে?


পিছন ফিরে তাকায় নাজিফা বেগম।মিহুর উদ্দেশ্য বলে,


-হ্যাঁ,তোর বড় মামা আসবে।


বড় মামার কথা শুনে মনটাই ভালো হয়ে গেলো মিহুর।এই মানুষটা মিহুর খুব বেশি প্রিয়।

মায়ের ডাকে ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো মিহু।নাজিফা বেগম মেয়ের হাতে একটা ট্রে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,


-এটা যেয়ে সাদিফের রুমে দিয়ে আয়।ওর বন্ধু আসছে।


মিহু ইতস্তত করে বলে,


-আমেনা খালা যেয়ে দিয়ে আসেন।আমি পারবোনা।


-দেখছিস না আমেনা কাজ করছে।ও পারবেনা।তুই যা।


বিরক্তিকর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ট্রে টা হাতে নেয় মিহু।

সাদিফের রুমে যেয়ে দরজায় দাড়িয়ে করে বলে,


-ভাইয়া দরজা খুলো।


সাদিফ যেয়ে দরজা খুলে দেয়।মিহুর হাতে খাবার দেখে সাইড দিয়ে বলে,


-টেবিলে রেখে দে।


মিহু ধীরপায়ে ভেতরে ঢুকে সাবধানে ট্রে টা রেখে দেয়।আড়চোখে একবার অভির দিকে তাকায়।অভিকে গভীরভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে পরক্ষনেই চোখ নামিয়ে নেয়।


বিছানায় হেলান দিয়ে একহাতে ফোন নিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মিহুকে পর্যবেক্ষন করছিল অভি।যদিও মুখের ভাব নির্বিকার।মিহু চলে যেতেই স্বাভাবিকভাবে বলে,


-কোন ক্লাসে পরে তোর বোন?


সাদিফ চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বলে,


-ইন্টারে।সেকেন্ড ইয়ার।


অভি বাঁকা হাসে।বিরবির করে বলে,

-ওহহো।বাচ্চা মেয়ে।


-কিছু বললি?


-নাহ্,ভালো।


ড্রইংরুমে বসে খোশমেজাজে আড্ডা দিচ্ছে সবাই।মিহু বসে আছে তার বড় মামার পাশে।মিহুর পাশে তার মামাতো বোন ফারিয়া।তাদের মুখোমুখি সোফায় বসেছে সাদিফ আর অভি।আর একটা সোফায় বসে আছে মিহুর বাবা ইমতিয়াজ আহমেদ।

অভি হাসিমুখে আফতাব হোসেন এর সাথে কথা বলছে।আফতাব হোসেন রীতিমতা মুগ্ধ তার কথা-বার্তায়।


অনেকক্ষন যাবত ফারিয়া মিহুর মাথা খেয়ে যাচ্ছে।অভির ব্যাপারে হাজারটা প্রশ্ন করে তার প্রশংসায় মিহুর মাথা ব্যাথা বানিয়ে ফেলছে সে।


-আমি কিছু জানিনাতো ফারিয়া।উনি ভাইয়ার ফ্রেন্ড শুধু এটাই জানি আর কিছু জানিনা।


-জানিসনা তো কি হয়েছে?জানবি।ছেলেটা যে কি সুন্দর দেখতে।কথা বলার স্টাইলটা কি সুন্দর।মিহুরে আমিতো ক্রাশ খেয়ে গেলাম।


মিহু বিরক্তি নিয়ে বলে,


-তোর কয়জনকে ভালো লাগে?যাকে দেখিস তার উপরই ক্রাশ খাস।


-ধ্যাত্ তুই বুঝবিনা।


মিহু কিছু বলেনা।এই মেয়েকে বুঝিয়ে লাভ নেই।

_______________


সন্ধ্যাবেলা মিহু রুমে বসে ফোন চালাচ্ছে।ফারিয়াও তার সাথেই আছে।হঠাৎই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো নাফিসা বেগম।ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল,


-মিহু,সাদিফ ডাকে তোকে।ওর রুমে যা।...আর ফারিয়া নিচে চল মা নাস্তা খেয়ে নে।


মিহু উঠে যায়।সাদিফ কেন ডাকছে ভেবে পায়না সে।


গুটিগুটি পায়ে ভাইয়ের কাছে যেতেই সাদিফ গম্ভীরভাবে বলে,


-তোকে নাকি কোন ছেলে ডিসটার্ব করে রাস্তায়?কে?আমাকে আগে বলিস নাই কেনো?


চুপ হয়ে যায় মিহু।অভির দিকে তাকিয়ে দেখে তার মুখে দুষ্টামি ভরা হাসি।দুই আঙ্গুল দিয়ে থুতনি চেপে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

তার ভাইকে চিনে সে।খুব রাগী।আমতা আমতা করে বলে,


-না মানে হ্যাঁ.....


সাদিফ ভ্রু কুচকে তাকায়।


-আমাকে আগে বলবি না?


-আ..আসলে...


তার কথা টেনে নিয়েই অভি বলে,


-তোর কাছে বলতে লজ্জা পায় হয়তো..


মিহু দাঁতে দাঁত চেপে তার দিকে তাকায়।অভি যে তাকে রাগানোর জন্য এমন করছে সেটা সে ভালো করেই বুঝতে পারছে।


-আচ্ছা,ঠিকাছে।যা তুই।আর কালকে আমার সাথে যাবি কলেজ।


মিহু মাথা নাড়িয়ে বের হয়ে যায়।মেজাজটা প্রচন্ড পরিমাণে গরম হয়ে আছে।এই ব্যাটা এতো অসভ্য কেন?

তার কি কোনো দরকার ছিল ভাইয়াকে বলার?

শেষে কিনা তার ভাইয়ের হাতেই তার ক্রাশ মার খাবে?উফ!!জাসট অসহ্যকর!!!


.

Comments

You May Also Like